বিদেশ ডেস্ক ॥ চীনের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে যে কথা উঠেছিল, তা দৃশ্যত নাকচ করেছেন বিশব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ দল। করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজতে চীনে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দলের প্রধান পিটার বেন এমবেরেককে উদ্ধৃত করে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উহান শহরের ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর ‘সম্ভাবনা নেই বললেই চলে’। তাহলে করোনাভাইরাসের উৎস কোথায়? বছরজুড়ে আলোচনায় থাকা সেই প্রশ্নের সুরাহা এই বিশেষজ্ঞরাও করতে পারেননি। ভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করতে আরও কাজ করতে হবে, উহানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনের যৌথ তদন্তের সমাপ্তিতে এই মন্তব্য করেছেন এমবেরেক। চীনের মধ্যাঞ্চলের হুবেই প্রদেশের শহর উহানেই ২০১৯ সালের শেষ দিকে নতুন করোনাভাইরাসে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার প্রথম খবর আসে। তারপর থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে ১০ কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে মারা গেছে ২৩ লাখের উপরে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমবেরেক বলেন, উহানে তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাতে রোগটির প্রাদুর্ভাবের চিত্রের নাটকীয় বদল ঘটেনি। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, নতুন এই করোনাভাইরাস মানবদেহে ছড়ানোর আগে অন্য কোনো প্রাণী থেকে এসেছে। তবে তা কীভাবে ঘটেছে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন। বাদুড়ের কোনো ‘প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার’ থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে সন্দেহ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তা উহানে ঘটার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দলের প্রধান। তিনি বলেন, অন্য কোনো প্রাণী থেকে মানবদেহে ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়ার পথ বের করার কাজ এখনও বাকি। তবে মধ্যবর্তী কোনো প্রজাতি থেকেই মানবদেহে এসেছে বলে ধারণা করছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষে চীনের উহানে নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগে তা সেখানে ছড়িয়েছিল বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। চীনের স্বাস্থ্য কমিশনের বিশেষজ্ঞ লিয়াং ওয়ানিয়ান বলেছেন, উহানে শনাক্ত হওয়ার আগে কোভিড-১৯ অন্যান্য অঞ্চলে থাকতে পারে। হিমায়িত খাবার পরিবহন ও ব্যবসার দিকে ইঙ্গিত করে তদন্ত দল বলছে, এই ‘কোল্ড চেইন’ ধরে ভাইরাসটি সংক্রমণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আরও তদন্ত হওয়া দরকার। বেইজিংয়ের সঙ্গে কয়েক মাসের আলোচনার পর গত জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজতে উহানে যায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দল। তবে তাদের কর্মকাণ্ডের উপর বিশেষ নজর রেখেছিল চীনা কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply